Friday, July 12, 2013

রাসূলে পাকের হস্ত চুম্বনের বিখ্যাত কারামত

রাসূলে পাকের হস্ত চুম্বনের বিখ্যাত কারামত


হযরত সাইয়্যেদ আহমদ কবীর রেফায়ী (রহ.) এর সর্বাপেক্ষা অধিক প্রসিদ্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ কারামত হচ্ছে বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুবারক চুম্বন করা। এই সৌভাগ্য কেবলমাত্র হযরত রেফায়ী কবীরেরই হয়েছে। ইতিহাসে এ ধরনের আর একটি ঘটনাও অশ্র“ত। ঘটনার বিবরণে শেখ উমর ফারুকী বলেন, হযরত রেফায়ী কবীর রহ. পাঁচশত পঞ্চান্ন হিজরী সনে প্রথম হজ্বব্রত পালন করেন। আমিও হযরত রেফায়ী রহ. সঙ্গে ছিলাম। হজ্বব্রত পালন করেই মদীনা পাকের সফর। শাম, ইরাক, ইয়ামান, মরক্কো, হেজায, ও আরব বিশ্বের নব্বই হাজারের অধিক হাজী সাহেবান হজ্ব শেষে যিয়ারতের উদ্দেশ্যে মদীনা পাকে সমবেত ছিল। হযরত রেফায়ী কবীর রহ. মদীনা পাকের এলাকায় পৌঁছেই পায়ের জুতা খুলে ফেলেন এবং আদব ও এহতেরামের সাথে অগ্রসর হন। যখন রওযা পাকের সম্মুখে হাজির হলেন তখন অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে এশকের হালতে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে এভাবে সালাম পেশ করেন :
السلام عليك يا جيدى
হে নানাজী! আপনার প্রতি সালাম! সাথে সাথে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে উত্তর দিলেন :
وعليكم السلام يا ولدى
হে আমার আওলাদ! তোমার প্রতিও আমার সালাম।
হযরত রেফায়ী রহ. উত্তর শুনে ওয়াজদে ভাবাবিষ্ট হয়ে পড়েন। তাঁর বরকতে উপস্থিত সকলেও রাসূলে পাকের সালাম শুনে সৌভাগ্যশীল হন। একটু শান্ত হয়ে হযরত রেফায়ী রহ. প্রেমের আবেগে নিম্নের কবিতা সমূহ আবৃত্তি করলেন :
فى حالة البعد كنت روحى ارسلها : تقبل الارض على وهى نائبى
وهذه دولة الاشباح حضرت : فامد ديمينك كئ تحظى بها شفتى
* দূরে অবস্থানকালে আমার রূহকে আপনার দরবারে পাঠিয়ে দিতাম, যেন সে আমার পক্ষে আপনার কদমবুসি করে যায়।
* এবার আমি স্বশরীরে আপনার মহান দরবারে হাজির হয়েছি; সুতরাং মেহেরবাণী করে আপনার হাত বাড়িয়ে দিন! যেন আমার ওষ্ঠাধর আপনার হাত মুবারক চুম্বনের সৌভাগ্য লাভে ধন্য হয়।
কবিতা পাঠের সাথে সাথে রওযা মুবারক থেকে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হস্ত মুবারক বের হয়ে আসে এবং সমস্ত মসজিদে নববী আলোকিত হয়ে যায়। আর হযরত রেফায়ী কবীর রহ. রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র হাত চুম্বন করে সৌভাগ্যশীল হন। উপস্থিত সকলেই রাসূলে পাকের হস্ত মুবারক যিয়ারত করে ধন্য হয়। হযরত শেখ হায়াত বিন কায়েস হারবুনী, শেখ আদী বিন মুসাফির, শেখ আকীল, কুতবে আলম মাহবুবে সুবহানী আব্দুল কাদের জিলানী, শেখ আহমাদুল কবী যাফরানী, শেখ আলী তাবারী, শেখ আহমাদ বিন মাহমূদী রিবযী , আমীর আসাদুদ্দীন বিন সাদী, শেখ হাসান বিন মুহাম্মাদ হুসাইনী ও শেখ আব্দুর রাযযক ওয়াসেতীও সেখানে হাজির ছিলেন, তারাও রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হস্ত মুবারক যিয়ারত করে ধন্য হন।
শেখ ইজ্জুদ্দীন ফারুছী বলেন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলমীনের আমার প্রতি বিশেষ রহমত যে, ছয়শত বাষট্টি হিজরী সনে আমার শ্রদ্ধেয় পিতা, হযরত রেফায়ী কবীর রহ. মাযার যিয়ারতের উদ্দেশ্যে ফারুছ থেকে উম্মে আবীদার পথে রওনা হন, আমার বয়স তখন মাত্র আঠারো। শ্রদ্ধেয় পিতা মেহেরবাণী করে আমাকে সাথে নিলেন। তখন রেফায়ী তরীকার উত্তরাধিকারী হিসেবে ছিলেন শেখ শাসুদ্দীন মুহাম্মাদ রেফায়ী। আমরা খানকাহে পৌছলাম। প্রাথমিক সাক্ষাতের পর আমাদের থাকার জন্য খানকাহের নিকটে একটি ভিন্ন হুজরাখানা দেয়া হলো। আশে-পাশের অসংখ্য হুজরাখানা এবং লোকে লোকারণ্য। জুমার দিন বাদ নামায শেখ আহমাদ কবীর রেফায়ী রহ. এর মাযারের দরজা খুলে দেয়া হলো। লক্ষ লক্ষ লোক যিয়ারতের উদ্দেশ্যে অসম্ভব ভীড় করছে। এমন সময় শ্রদ্ধেয় পিতা আমার হাত ধরে একজন বুযুর্গের সাথে সাক্ষাত করালেন এবং দোয়ার জন্য দরখাস্ত করলেন। শ্রদ্ধেয় পিতা আমার হাত ধরে একজন বুযুর্গের সাথে সাক্ষাত করালেন এবং দোয়ার জন্য দরখাস্ত করলেন। শ্রদ্ধেয় পিতা ঐ বুযুর্গের হাত চুম্বন করলেন, আমাকেও চুম্বন করতে বললেন, সুতরাং আমিও চুম্বন করলাম। তিনি দোয়া করে চলে গেলেন। আব্বাজান আমাকে বললেন, এই বুযুর্গের নাম শেখ আহমাদ বিন মুাহমূদ রেফায়ী, যিনি হযরত রেফায়ী কবীর রহ.-এর সাথে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হস্তু মুবারকের যিয়ারত লাভ করেছেন। এর কিছুক্ষণ পর শেখ মুবারক বিন জাফর উনয়াবী, শেখ আব্দুর রহমান দাইবিনী, শেখ রমযান বিন আবদে রাব্বিহী ও শেখ আব্দুল মুহসিন ওয়াসেতী আনসারী তাশরীফ আনলেন। আব্বাজান সকলের হাত চুম্বন করলেন এবং দোয়ার দরখাস্ত করলেন। আমিও পিতার অনুসরণ করলাম। আরো অসংখ্য লোকজন তাদের হস্তু চুম্বন করেন এবং দোয়ার দরখাস্ত করেন। সকলের চেহারায় তাদের প্রতি ছল প্রাণভরা ভক্তি শ্রদ্ধা। সকলের চোখ থেকেই অশ্র“ ঝরছিল। সকলেই তাদেরকে দেখে দেখে ওয়াজদের হালতে রোদন করছি। আব্বা আমাকে বললেন, তারা সকলেই রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাত মুবারক যিয়ারতের সৌভাগ্য লাভ করেছে, এ কারণেই লোকেরা এশকে ব্যাকুল হয়ে ক্রন্দন করছে। এ ঘটনাকে হযরত রেফায়ী কবীরের এর কারামতের মধ্যে গণ্য করা হয়। অসংখ্য ওলামা মাশায়েখ, মুহাদ্দিসীন ও ঐতিহাসিকগণ এঘটানাকে সত্য বলে রায় দিয়েছেন। তাই এর সত্যতার প্রশ্নে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। আল্লাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী, শেখ ছফেরী শেক ইজ্জুদ্দীন, ফারুছী, শেখ মুহাম্মাদ ওতবী. এবং আরো অসংখ্য উলামা মাশায়েখ বলেছেন: 
يخشى على منكر هذه القصة السعيدة سوء الخاتمة
যে ব্যক্তি এই কারামতকে অস্বীকার করবে তার অপমৃত্যুর ভয় আছে। 
আল্লামা সামেরায়ী বলেন:
قدافتى كثير من العلماء بان من ينكر هذه القصة قد ضل وغوى
অসংখ্য ওলামাদের ফাতওয়া অনুসারে এই কারামতের অস্বীকারকারী গোমরাহ এবং পথভ্রষ্ট।

6 comments:

  1. এ সব গল্পের কোনই ভিত্তি নেই।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ভিত্তি নেই কিভাবে বুঝলেন?????

      Delete
    2. নজদীর দালালরা বুঝবে না......

      Delete
    3. ।।।এটাতো ঐতিহাসিক ভাবে প্রমাণিত। কেন এসব ঘটনার ভিত্তি নেই।।।।

      এই ঘটনা ফালাফেরা কখনোই বিশ্বাস করবে না

      Delete
  2. It is simply story ,we should not trust it.

    ReplyDelete

https://isignbd.blogspot.com/2013/10/blog-post.html

এক অসাধারণ #না’তসহ দরূদ - বালাগাল উলা বি-কামালিহি: ইতিহাস, অনুবাদ ও তাৎপর্য