Showing posts with label Islamic Sign in Bangladesh. Show all posts
Showing posts with label Islamic Sign in Bangladesh. Show all posts

Wednesday, July 17, 2013

দক্ষিন এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো মুসলিম নিদর্শন বাংলাদেশে! সাড়ে তেরো শ বছর আগের মসজিদ। পাল্টে যাবে দক্ষিণ এশিয়ায় মুসলিমদের আগমনের ইতিহাস

দক্ষিন এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো মুসলিম নিদর্শন বাংলাদেশে! সাড়ে তেরো শ বছর আগের মসজিদ। (পাল্টে যাবে দক্ষিণ এশিয়ায় মুসলিমদের আগমনের ইতিহাস)

- কাজল রশীদ ও ইফতেখার মাহমুদ 


দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ। এক পাশে দু-এক ঘর করে ফাঁকা জনবসতি। মোটেই ঘনবসতিপূর্ণ নয় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা লালমনিরহাটের পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের রামদাস গ্রাম। অথচ এখানেই আবিষ্কৃত হয়েছে ৬৯ হিজরিতে নির্মিত মসজিদ। সামনে ফসলের মাঠটি একদা ছিল চকচকার বিল। এলাকার প্রবীণ মানুষের কাছে স্থানটি আজও সাগরের ছড়া নামে পরিচিত, যার অনতিদূরে তিস্তা নদীর অবস্থান। ব্রহ্মপুত্র-তিস্তা অববাহিকাকে বলা হয় পৃথিবীর প্রাচীনতম অববাহিকাগুলোর একটি। কাজেই এই অববাহিকায় ৬৯ হিজরি বা ৬৪৮ খ্রিষ্টাব্দে একটি মসজিদ নির্মাণের ঘটনা বিস্ময় জাগানিয়া হলেও একেবারে অস্বাভাবিক নয়। শৌখিন ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক টিম স্টিলও তেমনটাই মনে করেন। বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলজুড়ে যে প্রাচীন সভ্যতা খ্রিষ্টপূর্ব সময় থেকে গড়ে উঠেছিল, তার সঙ্গে প্রাচীন রোমান ও আরব-সভ্যতার সম্পর্ককে ইতিহাসের স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবেই দেখেন টিম স্টিল। সভ্যতার সঙ্গে সভ্যতার এই সম্পর্কের সূত্র ধরেই আরব বণিকেরা লালমনিরহাটের ওই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেনএমনটাই মনে করেন তিনি

স্থানীয় অধিবাসী এবং ইতিমধ্যে গঠিত হারানো মসজিদ কমিটির সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়তাঁদের দাবি অনুযায়ী এই মসজিদটি নির্মাণ করেছেন মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর একজন সাহাবা। যিনি এই অঞ্চল দিয়ে চীনে পাড়ি জমিয়েছিলেন। এবং চীনের বিস্মৃত কোয়াংটা নদীর ধারে কোয়াংটা শহরে তাঁর নির্মিত মসজিদ ও সমাধি রয়েছে। ওই সাহাবির নাম আবু আক্কাছ (রা.) ৬৯ হিজরিতে তৈরি মসজিদের ধ্বংসাবশেষের ওপরই গড়ে উঠেছে বর্তমানের মসজিদ কমপ্লেক্স

মোস্তের আড়া বা মজদের আড়া
বর্তমানের হারানো মসজিদ কমপ্লেক্স যে স্থানে অবস্থিতসেই স্থানটি একদা পরিচিত ছিল মোস্তের আড়া বা মজদের আড়া নামে। স্থানীয় অধিবাসী দেলওয়ার হোসেন জানানস্থানটি টিলার মতো ছিল। ওখানে কেউ যেত না। তবে অনেকেই আগরবাতিমোমবাতিফুলধুপ ইত্যাদি ওই স্থানে রেখে আসত। এখানে মসজিদমন্দির না অন্য কিছু আছে কিছুই জানত না তারা। উল্লেখ্যস্থানীয় ভাষায় আড়া শব্দের অর্থ হলো জঙ্গলময় স্থান। দীর্ঘদিনের পতিত এই জঙ্গলে স্থানীয় লোকজন হিংস্র জীবজন্তুসাপ-বিচ্ছু ইত্যাদির ভয়ে ভেতরে প্রবেশ করত না

জানা যায়রামদাস এলাকায় বর্তমানে যাঁরা বসবাস করছেনতাঁদের পূর্ব পুরুষরা ২০০ বছর আগে এখানে বসতি শুরু করেন। হারানো মসজিদ কমপ্লেক্স যা আগে আড়া নামে পরিচিত ছিলতার একদা মালিক ছিলেন পচা দালাল। তাঁর কাছে থেকে কিনে নেন ইয়াকুব আলী। আনুমানিক সময়কাল ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দ। পরবর্তী সময়ে উত্তরাধিকার সূত্রে জায়গাটির মালিক হন নবাব আলী। হারানো মসজিদ আবিষ্কারের পর তিনি জায়গাটা হারানো মসজিদ কমপ্লেক্সের নামে দিয়ে দেন

যেভাবে আবিষ্কার
৬৯ হিজরির হারানো মসজিদ তায়ালিমুল কোরআন নূরানি মাদ্রাসার শিক্ষক হাফিজ নূর আলম জানানমজদের আড়ায় চাষাবাদ করার জন্য খোঁড়া শুরু হয় ১৯৮৩-৮৪ সালের দিকে। টিলাটি সমতল করার জন্য খোঁড়া শুরু হলে এখানে প্রচুর ইট পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকজনের ধারণাপুরোনো কোনো জমিদার কিংবা রাজরাজড়ার বাড়ি হয়তো এখানে ছিল। এ কারণে তারা এ নিয়ে কোনো রূপ সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেনি। যে যার মতো ভাঙা ইটের টুকরো নিয়ে গেছে এবং বেশির ভাগই তারা নিজেদের বাড়িঘরের কাজে লাগিয়েছে। কিন্তু একটা ঘটনায় পাল্টে যায় পুরো ঘটনাচক্র

ছটকে পড়া’ ইট
একটা ইটের ছিটকে পড়ার ঘটনাস্থানীয় ভাষায় ছটকে পড়ার মধ্য দিয়েই মজদের আড়ায় আবিষ্কৃত হয় ৬৯ হিজরি বা ৬৪৮ খ্রিষ্টাব্দের হারানো মসজিদ। স্থানীয় অধিবাসী আফছার আলী বলেন, ‘আমরা ঘটনাটিকে অলৌকিক বলেই মনে করি। ঘটনাটা হলোআইয়ুব আলী নামে রামদাসের একজন বাসিন্দা অন্য অনেকের মতো মজদের আড়া থেকে ইট কুড়িয়ে নিয়ে যানযা পরিষ্কার করার সময় দেখতে পানইটের গাদা থেকে একটা ইট যেন আলাদাভাবে ছিটকে পড়ল। তিনি আশ্চর্য হন এবং কৌতূহল বোধ করেন। ছিটকে পড়া ইটটার ওপর কী যেন লেখা দেখতে পান। টিউবওয়েলের পানিতে ইটটা ভালো করে ধুয়ে নেন। তারপর ইটটা অন্যদের দেখালে সবাই দেখতে পানওই ইটটি একটি প্রাচীন শিলালিপিযার আকার ৬XXওপরে স্পষ্টাক্ষরে লেখালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ হিজরি সন ৬৯। এই ঘটনায় স্থানীয় লোকদের মনে দৃঢ় প্রত্যয় জন্মেএটা কোনো হারানো মসজিদের ধ্বংসাবশেষ

অলৌকিক কাহিনি
ওই ঘটনার পর তখনো মজদের আড়ায় নামাজ পড়া শুরু হয়নি। এক রাতে আফছার আলী শুনতে পান একজন বলছেন (কণ্ঠটা ঠিক তাঁর ভায়রা নওয়াব আলীর মতো) চলোআমরা মজদের আড়ায় নামাজ পড়ি। নামাজ পড়ার জন্য তিনি বেরিয়েও পড়েন। একসময় পৌঁছে যান ভায়রার বাড়িতে। অপেক্ষা করেনকিন্তু ভায়রা আর ভেতর থেকে বের হন না। পরে ডাকাডাকি শুরু করেন এবং বলেন নামাজ পড়ার জন্য ডেকে নিয়ে এসে তুমি আর বেরোচ্ছ না কেনএ কথা শুনে নওয়াব আলী তাজ্জব বনে যান। ঘটনাটা এলাকায় জানাজানি হলেসবাই মিলে ওই দিন থেকেই নামাজ পড়া শুরু করেন। এলাকাবাসীর মতেসেটা ৮৬ সালের ঘটনাওই দিন ছিল মহররমের ১০ তারিখ। পরবর্তী সময়ে এখানেই নির্মাণ করা হয় হারানো মসজিদ কমপ্লেক্স এবং একটি নূরানী মাদ্রাসা
উল্লেখ্যএর আগে এলাকাবাসী নামাজ পড়ত তিন কিলোমিটার দূরের সুবেদার মুনছুর খাঁ নিদাঁড়িয়া মসজিদেযা একই ইউনিয়নের নয়ারহাট পাড়ায় অবস্থিত। এই মসজিদটি মোগল আমলের স্থাপত্যকীর্তির সাক্ষ্য বহন করছে। অবশ্য এটিও দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর আড়ালে ছিল। স্থানীয় লোকজন গরু খুঁজতে গিয়ে এই মসজিদটি জঙ্গলের ভেতর খুঁজে পায়। অবশ্য এলাকাবাসী তারও আগে ছয় থেকে সাত কিলোমিটার দূরের রতিপুরের কেরামতিয়া বড় মসজিদে নামাজ পড়তে যেত

সাক্ষী শিলালিপি
যে শিলালিপির আলোকে হারানো মসজিদকে ৬৯ হিজরির বলা হচ্ছেসেই শিলালিপি এখন নানা হাত ঘুরে রংপুরের তাজহাট জমিদারবাড়ির জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। শিলালিপিটি রামদাসবাসীর কাছ থেকে নিয়ে যান কুড়িগ্রামের একজন সাংবাদিক। তাঁর কাছ থেকে পরবর্তী সময়ে সংগ্রহ করে সংরক্ষণের জন্য রাখা হয় তাজহাট জমিদারবাড়ি জাদুঘরে। উল্লেখ্য১৯৯৩ সালে রংপুুরের টাউন হলে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। যার বিষয় ছিল হিজরি প্রথম শতাব্দীতে ইসলাম ও বাংলাদেশ। এতে সভাপতিত্ব করেন কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল কুদ্দুস বিশ্বাস। প্রবন্ধকার ও সব আলোচক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে প্রমাণ করতে সক্ষম হন যে৬৯ হিজরি অর্থাৎ ৬৪৮ খ্রিষ্টাব্দে সাহাবায়ে কেরামগণ কর্তৃক এই হারানো মসজিদ নির্মাণ করা মোটেই অসম্ভব নয়
একজন টিম স্টিল
কর্মসূত্রে টিম স্টিল তখন বাংলাদেশের টাইগার ট্যুরিজম নামের একটি পর্যটন উন্নয়নবিষয়ক প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা। সাউথ ওয়েলসে স্ত্রী ক্রিস্টিন ও দুই মেয়ের সঙ্গে ছুটি কাটিয়ে বাংলাদেশে ফিরলেন তিনি। ছুটে গেলেন লালমনিরহাটে। খুঁজে বের করলেন প্রাচীন মসজিদটি। তিনি বাংলা ও উপমহাদেশের প্রাচীন ইতিহাস তন্ন তন্ন করে খুঁজতে শুরু করলেন। ৬৪৮ খ্রিষ্টাব্দে কে কেন লালমনিরহাট এলাকায় ওই মসজিদ নির্মাণ করল তা খুঁজতে নেমে গেলেন তিনি। যোগাযোগ করলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের সঙ্গে। তারা আগ্রহ দেখাল না। বেশির ভাগ প্রত্নতাত্ত্বিক ও ইতিহাসবিদ বললেন এত আগে ওই অঞ্চলে মসজিদ নির্মিত হওয়ার কথা না। বাংলার ইসলাম বিস্তারের ইতিহাসের প্রভাবশালী ধারা বলে ১০০০ শতকে চট্টগ্রামে সুফিদের প্রথম আগমন ঘটে। ১১০০ থেকে ১২০০ শতকে সুফিদের হাত ধরে পূর্ববাংলায় ইসলামের প্রচার ও প্রসার শুরু। তাঁদের হাতেই এই অঞ্চলে প্রথম মসজিদ নির্মাণ হয়। পরে সুলতান ও মোগলদের হাত ধরে তার আরও প্রসার ঘটে

মসজিদের ইট হাতে টিম স্টিল

লালমনিরহাটের এক প্রত্যন্ত গ্রামে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদ রয়েছেএটা প্রমাণের জন্য টিম স্টিল সহায়তা নিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্নতাত্ত্বিকদের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব আর্কিওলজিস্টের। সেখানকার ইসলামের ইতিহাস ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নিয়ে গবেষণা করেন এমন সব গবেষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। তাঁরা বললেন হ্যাঁহতে পারে। কেননারোমান ও জার্মান অনেক ইতিহাসবিদের লেখায় আরব ও রোমান বণিকদের ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় নৌ-বাণিজ্যের সূত্রে আসা-যাওয়ার কথা লিপিবদ্ধ আছে। আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব আর্কিওলজি টিম স্টিলকে জানায়তাদের বেশ কয়েকটি চলমান গবেষণায় ব্রহ্মপুত্র-তিস্তা অববাহিকাকে পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নৌপথ হিসেবে ব্যবহূত হওয়ার প্রমাণও পাওয়া গেছে
টিম জানতে পারলেনব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পাড় ধরে সিকিম হয়ে চীনের ভেতর দিয়ে আরব বণিকদের বাণিজ্যবহরের যাতায়াতের অনেক প্রমাণও টিমের হাতে আসে। টিমের গবেষণায় আরও প্রমাণ মেলে খ্রিষ্টপূর্ব সময় থেকে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা দিয়ে চীন ও ভারতবর্ষ থেকে রোমান ও আরবরা পণ্য নিয়ে যেত। রোমানদের সঙ্গে বাংলার যোগাযোগের আরও প্রমাণ তিনি পান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুফি মোস্তাফুির রহমানের ওয়ারি-বটেশ্বর সভ্যতা নিয়ে গবেষণায়। নরসংদী থেকে কিশোরগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে প্রাচীন নগর-সভ্যতার যে নিদর্শন মোস্তাফিজুর রহমান পেয়েছেনতাতে এটা ধীরে ধীরে পরিষ্কার হয়ে পড়ছেদক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা বাংলাদেশ ভূখণ্ডে গড়ে উঠেছিল। পঞ্চগড়ের ভিটাগড়ে প্রাচীন নগরের নিদর্শন পাওয়া প্রত্নতাত্ত্বিক অধ্যাপক শাহনেওয়াজের গবেষণা থেকেও সহায়তা পান টিম। বগুড়ার মহাস্থানগড় বা নওগাঁর প্রাচীন মসজিদ এই সবকিছুকে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে গড়ে ওঠা প্রাচীন-সভ্যতার ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখতে চান টিম স্টিল
এই শৌখিন প্রত্নতাত্ত্বিক ১৯৯৮ সাল থেকে বাংলাদেশের ইতিহাস অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে জীবনের আরেক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন। লালমনিরহাটে দক্ষিণ এশিয়ার প্রাচীন মসজিদের খোঁজ পেয়ে এই অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার যে নেশা তাঁকে পেয়ে বসেছে তা থেকে মুক্ত হতে চান না তিনি। তাই তো নিজ উদ্যোগে ও খরচে চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁর শখের প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা
বাংলাদেশের ওই হারানো মসজিদের ওপর আরও গবেষণা হওয়া উচিত এই আকুতি রেখে টিম বলেনওই মসজিদ নির্মাণের ইতিহাস খুঁজে পেলে হয়তো বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্ব সভ্যতার সম্পর্কের আরেক ইতিহাস জানার পথ খুলে যাবে। রোমানচৈনিকআরব আর বাংলাএই চার অঞ্চলের প্রাচীন সভ্যতার সঙ্গে সম্পর্ক জানা গেলে হয়তো পৃথিবীর ইতিহাস অন্যভাবে লিখতে হবে। টিম স্টিলের গবেষণায় প্রতীয়মান হচ্ছেএটি এক হাজার তিন শ চৌষট্টি বছর আগের মসজিদ! যার সূত্র ধরে পাল্টে যাবে দক্ষিণ এশিয়ায় মুসলিমদের আগমনের ইতিহাস

Source: প্রথম আলোতারিখ: ১৯-১০-২০১২



See This Video:

 

Browse this link please For aljazeera Report with video:

Ancient mosque unearthed in Bangladesh 


''Sign of Rasulullah'' Label's Other Link:


Tuesday, July 16, 2013

মুসলমানরাই বাংলাদেশের আদিবাসী

-মাহমুদ ইউসুফ
প্রখ্যাত ভাষাতাত্ত্বিক, শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর (অবসরপ্রাপ্ত) ডঃ কাজী দীন মুহাম্মদ বলেছেন, ‘আজ সাড়ে সাত হাজার বছর আগে হযরত নুহু (আঃ) এর সময়ে সংঘটিত মহাপ্লাবনের পর আল্লাহর অস্তিত্ব ও একত্ববাদে বিশ্বাসী তাঁর প্রপৌত্র বঙ এ অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেন। এরপর যে জনগোষ্ঠি গড়ে ওঠে তা-ই বঙ্গ জনগোষ্ঠি নামে অভিহিত হয়। কালের বিবর্তনে উক্ত বঙ থেকেই বঙ্গ দেশের নামকরণ হয়েছে’ (বাংলাদেশের উৎপত্তি ও বিকাশ ১ম খন্ড, ইফাবা, ২য় সংস্করণ, জুন-২০০৮, পৃ-১৬৭)। মানবজাতির আদি পিতা হযরত আদম (আঃ)। তিনিই এ পৃথিবীতে মানব সভ্যতার জয়যাত্রা শুরু করেন। ইসলাম, ইহুদী ও খৃস্টান ধর্মমতে এটাই চরম সত্য। কুরআন, বাইবেল, তাওরাতে এ সত্যেরই প্রতিধ্বনি উচ্চারিত হয়েছে।

পৃথিবীর প্রথম মানব হযরত আদম (আঃ)কে আল্লাহ রাববুল আলামীন এ ভারতবর্ষেই প্রেরণ করেন। তদানীন্তন সরন্দীপ (আজকের শ্রীলঙ্কা) আর হিন্দুস্তান একই ভূখন্ডের অন্তর্ভুক্ত ছিল। হযরত আদম (আঃ) এর পুত্র দ্বিতীয় নবী হযরত শীষ (আঃ)ও এই ভারতবর্ষেরই নাগরিক ছিলেন। এখানেই তিনি বসতি স্থাপন করেন। আর এখানেই মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে হযরত নুহু (আঃ) এর উত্তরপুরুষেরা ভারতবর্ষ আবাদ করেন। তাই দেখা যায়, মুসলিমদের কাছে শুধু আরবভূমিই নয় এই ভারতীয় উপমহাদেশও অতি আপনভূমি। কেননা মানব সভ্যতার শুরু থেকেই মুসলমানরা এই ভূখন্ডে বসবাস করে আসছে। নেগ্রিটো, অস্ট্রল্যান্ড, অস্ট্রো এশিয়াটিক, মঙ্গোলয়েড, অস্ট্রিক, দ্রাবিড়, বৌদ্ধ, আর্য জাতির বিকাশ আরও পরের ঘটনা।পার্বত্য উপজাতির আগমন তো সেদিনের ঘটনা। সর্বোচ্চ তিনশ বছর।
খৃস্টপূর্ব সাড়ে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে একমহাপ্লাবন সংঘটিত হয়! অনেকের মতে খৃস্টপূর্ব ৩২০০ অব্দে এটি সৃষ্টি হয়েছিল। এ মহাপ্লাবন মিসর থেকে হিন্দুস্তান, ককেশাস থেকে আরব সাগর পর্যন্ত ছড়িয়েছিল। এটি ছিল মূলতঃ আল্লাহর গজব। হযরত নুহু (আঃ) দীর্ঘ সাড়ে নয়শ বছর ইসলাম প্রচার করেন। কিন্তু গুটিকয়েকজন নাগরিক ছাড়া আর কোনো নাগরিক আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস স্থাপন করেন নাই। এই অমুসলিম তথা মুশরিক কাফিরদের শাস্তি দেয়ার লক্ষ্যেই মহান রব গজব নাজিল করেন। এ মহাপ্লাবনে মাত্র ৮৫ জন মানুষ, যারা নূহ (আঃ) এর কিস্তিতে আরোহণ করেছিলেন তারাই জীবিত থাকে। বাকি সমগ্র মানবজাতি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। পানিবন্যা পরবর্তী সময়ে হযরত নুহ (আঃ) এর সন্তানেরা বিভিন্ন দেশে বসতি স্থাপন করেন। তাঁর দৌহিত্র হিন্দ ভারতবর্ষ আবাদ করেন। বঙের বংশধরদের আবাসস্থলই আজকের বাংলাদেশ। বং থেকে কালক্রমে বঙ্গ, বাঙালাহ, বেঙ্গল, বাংলা ইত্যাদি নামের উদ্ভব ঘটে।
বঙ্গ নামের উৎপত্তির সঙ্গে অনেক লেখক, গবেষক ও ঐতিহাসিক ভিন্নমত পোষণ করেন। তাদের মতে, বঙ্গ শব্দের উৎপত্তি ভারতীয় আর্যদের আমলে, যারা খৃস্টপূর্ব দেড় হাজার বছর পূর্বে মধ্য এশিয়া থেকে এসে সিন্ধু নদীর তীরে দ্রাবিড়দের উৎখাত করে বসতি স্থাপন করে। প্রমাণস্বরূপ তারা উল্লেখ করেছেন, ঋগবেদের ঐতরেয় আরণ্যক এ বঙ্গ শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়। মহাভারত, পুরাণ, হরিবংশ প্রভৃতি গ্রন্থে বর্ণিত আছে, ‘আর্য রমণীগণ কর্তৃক পরিত্যক্ত, দুশ্চরিত্র অন্ধ ঋষি দীর্ঘতমা গঙ্গার জলে ভেসে আসাকালীন নিঃসন্তান ‘‘অনার্য’ বলিরাজ তাঁকে তুলে নিয়ে যান এবং স্বীয় পত্নী সুদেষ্ণার গর্ভে পুত্র উৎপাদনের জন্য তাঁকে নিয়োগ করেন। সুদেষ্ণার গর্ভে উক্ত ঋষির ঔরসে পাঁচটি পুত্র সন্তান জন্মলাভ করে। এই ক্ষেত্রজ পুত্র সন্তানদের নাম রাখা হয় ১) অঙ্গ, ২) বঙ্গ, ৩) কলিঙ্গ ৪) পুন্ড্রু এবং ৫) সূক্ষ্ম। তাদেরকে পাঁচটি রাজ্য দেয়া হয় এবং তাদের নামানুসারে পাঁচটি রাজ্যের নামকরণ করা হয়’। যারা এই তথ্যকে সঠিক বলে প্রমাণ করতে চায়, তাদের নিম্নের বিষয়গুলো বিবেচনার জন্য পেশ করা হলো। এক- কোনো যুক্তিবাদী ও বাস্তবজ্ঞান সম্পন্ন মানুষ কী উপরোক্ত তথ্য বিশ্বাস করতে পারেন?
দুই- বলিরাজ বা ধর্মপাল অষ্টম শতকে বাংলাদেশের ইতিহাসের একজন মহান, ন্যায়পরায়ণ, জনদরদী, সজ্জন এবং পন্ডিতপ্রবর শাসক ছিলেন? তাঁর স্ত্রী সুদেষ্ণাও একজন মহিয়সী নারী ছিলেন। এই মহৎ শাসক তাঁর স্ত্রীর গর্ভে দুশ্চরিত্র দীর্ঘতমার জারজ সন্তান ধারণ করার অনুমতি দেবেন অথবা একজন সতী নারী একজন লম্পটের ভ্রূণ গ্রহণ করবেন এটা কী বিশ্বাসযোগ্য? তিন-ভারতে আর্য আধিপত্য প্রতিষ্ঠার আগে এ অঞ্চলের নাম কী ছিলো সে বিষয়ে তারা কিছু ধারণা দেননি কেন? চার-ঋগবেদ, পুরাণ, মহাভারতে এ অঞ্চলের অধিবাসীদেরকে কেন অত্যন্ত হেয় ও ঘৃণ্যবলে প্রতিপন্ন করা হয়েছে? পাঁচ- কোনো মানুষকে কী দস্যু, অসুর, দেও দানব, রাক্ষস, পক্ষী, অনার্য আখ্যা দেয়া যায় কিনা বা উচিত কিনা? ছয়-বাংলা ভাষাকে আর্যরা আসুরিক ও ম্লেচ্ছদের ভাষা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে কেন? সাত- সেনবর্মনরা কেন বাংলা ভাষা নিধনে মেতে ওঠেছিল? আট-রিয়াজ-উস-সালাতিন গ্রন্থে বর্ণিত বাংলা নামকরণ সম্পর্কে প্রদত্ত বক্তব্য হিন্দু ঐতিহাসিকরা খন্ডন করেননি বা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেননি। থলের বিড়াল বেরিয়ে যাবার ভয়ে কী? নতুন কোনো তথ্য বা যুক্তি উপস্থাপন করতে হলে অবশ্যই অতীতের বক্তব্য খন্ডন করতে হবে। এটাই ইতিহাসের স্বাভাবিক নিয়ম। নয়-বলিরাজ বা ধর্মপাল নিজেই বঙ্গের শাসক ছিলেন। তাই জারজ সন্তান সৃষ্টি করে তার নামে বঙ্গের নামকরণের যৌক্তিকতা থাকতে পারে না। বলিরাজের অনেক পূর্ব থেকেই এ অঞ্চলের নাম বঙ্গ হিসেবে পরিচিত। তাছাড়া অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ, পুন্ড্রু, সূক্ষ্ম নামে তাঁর কোনো সন্তান ছিলো না। ধর্মপালের পূর্বে এদেশ শাসন করে তার পিতা গোপাল, ধর্মপালের মৃত্যুর পর পুত্র দেবপাল, তারপর বিগ্রহপাল মসনদে বসেন। দশ-প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালি পরাক্রমশালী একটি জাতি। যেসব ঐতিহাসিক স্বজাতিকে জারজ হিসেবে আখ্যায়িত করতে চায় তাদের মানসিক সুস্থতা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। এসব প্রশ্নের জবাব খোঁজা অতীব জরুরী।
ডঃ এম এ আজিজ ও ডঃ আহমদ আনিসুর রহমান বলেছেন, ‘আর্যদের আগমনের বহুপূর্বেই প্রাগৈতিহাসিক যুগে উপমহাদেশের এ অঞ্চলে ‘বঙ্গ’ নামে জনপদ বিদ্যমান ছিল। আর্যদের পৌরাণিক কাহিনী থেকে যে ‘বঙ্গ’ শব্দের উৎপত্তি নয় তা-ও সুস্পষ্ট। কাজেই ‘বঙ্গ’ শব্দের উৎপত্তি ভারতীয় আর্য হিন্দু আমলে হয়েছে বলে গ্রহণযোগ্য নয় (বাংলাদেশের উৎপত্তি ও বিকাশ ১ম খন্ড, ইফাবা, ২য় সংস্করণ, জুন-২০০৮, পৃ-৪)। রমেশ চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘আর্য জাতির সংস্পর্শে আসিবার পূর্বেই বর্তমান বাঙালী জাতির সংস্পর্শে বাঙালি জাতির উদ্ভব হইয়াছিল এবং তাহারা একটি উচ্চাঙ্গ ও বিশিষ্ট সভ্যতার অধিকারী ছিল’ (বাংলাদেশের ইতিহাস)। তিনি অন্যত্র বলেছেন, ‘(বাংলাদেশের) প্রাচীন লিপিতে দীনার ও রূপক এই দুই প্রকার নাম পাওয়া যায়। সম্ভবত স্বর্ণমুদ্রার নাম ছিল দীনার ও রৌপ্য মুদ্রার নাম ছিল রূপক। ১১৬ রূপক এক দীনারের সমান ছিল’। দীনার শব্দটি সেমিটিক পরিভাষার সাথে সম্পর্কিত। প্রখ্যাত গবেষক ও লেখক সিরাজ উদ্দীন আহমেদ বলেছেন, ‘বাঙাল জনগোষ্ঠীর নামকরণ বাঙ, কৌম বা গোত্র থেকে হয়েছে। ভাগিরথীর পূর্বদিকে গাঙ্গেয় বদ্বীপ এলাকায় সুপ্রাচীনকাল থেকে বাঙ জনগোষ্ঠী বাস করত। ….প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে বাঙ জাতি এ অঞ্চলে বাস করত এবং তাদের নামানুসারে বঙ্গ জনপদের নামকরণ’ (পৃ-৫১, বরিশালের ইতিহাস প্রথম খন্ড, ভাস্কর প্রকাশনী, জুলাই-২০০৩)। অন্যত্র তিনি বলেছেন, ‘বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ বাঙালী জাতির প্রধান আদি বাসস্থান। সুদূর প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে বাঙ জাতি এ অঞ্চলে বাস করত। বাঙালী শঙ্কর জাতি। নরতত্ত্ব, জাতিতত্ত্ব ও ভাষাতত্ত্বের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করলে বাঙালী জাতির উৎপত্তি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়’ (পৃ-৪৯, পূর্বোক্ত)। এই বাঙ নামকরণ হযরত নুহর প্রপৌত্র বঙ থেকেই উদ্ভূত। আর্য হিন্দু প্রভাবিত ইতিহাসবিদ, লেখক, গবেষকরা এ তথ্যকে গোপন বা অস্বীকার করলেও এটিই প্রকৃত ও সত্য ইতিহাস।
সাম্রাজ্যবাদের তল্পিবাহক বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজ বাংলাদেশি মুসলমানদের শেকড়শূন্য ও বহিরাগত হিসেবে প্রতিপন্ন করতে সঙ্কল্পবদ্ধ। পার্বত্য উপজাতিরা ওই অঞ্চলে সর্বোচ্চ তিনশ বছর পূর্বে এ অঞ্চলে আগমন করে। আর মুসলমানরা সভ্যতার শুরু থেকেই বাংলাদেশের বাসিন্দা। তাই বাংলাদেশি মুসলমানরাই বাংলাদেশের আদিবাসী ও প্রাচীন অধিবাসী। মুসলমানরাই ভারতবর্ষের সুপ্রাচীন জাতিগোষ্ঠী।

Wednesday, July 10, 2013

সামন্তযুগে বাংলাদেশে হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (র:)'র ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার উদ্দীপনাময় কাহিনী

সামন্তযুগে বাংলাদেশে হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (র:)'র ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার উদ্দীপনাময় কাহিনী-

নেত্রকোনার পূন্য ভূমি মদনপুরে মুসলিম সভ্যতা বিকাশের ঊষা লগ্নে পূর্ব বঙ্গে সামন্ত প্রভূদের অত্যাচার যখন তুঙ্গে উঠে, তখন সূদুর আরব দেশ থেকে ওলীয়ে তাপস মণি হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (:) বঙ্গে প্রথম ইসলামের ডংকা বাজিয়ে ছিলেন। ডংকার সেই বজ্র ধ্বনি সম্প্রীতির সেতু বন্ধনে আজও বহমান রয়েছে নেত্রকোনার মদনপুরে।  

ঐতিহাসিকদের মতে খ্রীষ্টিয় অষ্টম শতকের মধ্য ভাগে পাল বংশ বাংলায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্টিত হয়। পাল শাসক ন্যায় পাল (১০৪৩-৫৪) বাংলার শাসন কর্তা ছিলেন। এসময় শাসকগণ সাম্রাজ্যকে কয়েকটি পরগনায় ভাগ করে স্থানীয় রাজাদের সামন্ত শাসক হিসেবে নিযুক্ত করে তাদের উপর শাসন কার্য পরিচালনার ভার দিতেন। ১০৩৮ সালে সম্রাট প্রথম মহী পালের মৃত্যুর পর পাল সাম্রাজ্য পতনের দিকে যেতে থাকলে সাম্রাজ্যে দেখা দেয় চরম বিশৃংখলা। পাল রাজ ন্যায়পাল পরবর্তী রাজাগণ রাজ্য শাসনে অক্ষমতার পরিচয় দিতে থাকলে রাজধানী গৌড়ে তাদের ক্ষমতা সিমাবদ্ধ হয়ে যায়। দুর্বলতার সুযোগে বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলের সামন্ত শাসকগণ স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়।

মো: সাজ্জাদুর রহমান ফকির সম্পাদিত হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (:) জীবনি গ্রন্থ বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ময়মনসিংহ অঞ্চলের গৌরীপুরের বোকাই নগর এবং নেত্রকোনার মদনপুর পরগনায় সে সময় সামন্ত রাজা ছিলেন বোকাই কোচ মদন মোহন কোচ। এদের অত্যাচারে এলাকার অধিবাসীগণ তখন অতীষ্ট হয়ে পড়েন। বোদ্ধ ধর্মাবলম্বী হয়েও রাজ্যের নৃপতিগণ শংখরাজৈর প্রভাবে হিন্দু দেবতাদের পূজায় নিমগ্ন হয়ে আধিপত্য বিস্তারে বেপরোয়া হয়ে উঠে। হিন্দু দেব-দেবীর উপাসনালয়ে যেরূপমন্ত্র ব্রাহ্মনগণ পাঠ করতো কালক্রমে বোদ্ধরা এগুলো অনুসরণ করে হিন্দু মতবাদে রূপান্তরিত হয়ে প্রজা সাধারণের উপর তা চাপিয়ে দেওয়া হয়। এমনি এক অমানিশার অন্ধকার যুগে সূদুর আরব দেশ থেকে ৪৪৫ হিজরী সালে (১০৫৩খ্রীঃ) অলীয়ে কামেল তাপস মণি হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমী (রঃ) ১২০ জন সঙ্গী নিয়ে নদী পথে বঙ্গদেশে আগমন করেন। তিনি রোমের বাদশাহ ছিলেন। তিনি প্রথমে চট্টগ্রামের চট্টল বন্ধরে অবতরন করে কিছুদিন অবস্থান করেন। ১২০ সদস্যের আরবীয় ইসলাম প্রচারকারী মিশনের নেতৃত্ব নিয়ে তিনি বঙ্গদেশে এসে কয়েকটি উপদলে বিভক্ত হয়ে দক্ষিন বঙ্গে ইসলামের শান্তির বাণি পোঁছাতে শুরু করেন। চট্টগ্রাম থেকে হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমী (:) এঁর কাফেলা খুলনার দিকে চলে যায়। হযরত শাহ্ সৈয়দ মাহমুদ বলখী (:) নেতৃত্বে একটি উপদল যমুনা পথে বগুড়ায় ইসলাম প্রচার কার্যে গমন করে। বগুড়ার সুশাসনকর্তা ছিলেন পালরাজের অধীনস্থ সামন্তরাজ পরশুরাম। হযরত সৈয়দ মাহমুদ শাহী শেয়ার (:) সদলবলে রাজা পরশুরামের রাজধানী মহাস্থ নগড়ে অবস্থান নিলেন। সেখান হতে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে পুশুর রামের দরবারে দূত পাঠালেন। পরশুরাম ইসলামের কাফেলারে কথা শুনে ভীষন ক্ষীপ্ত হয়ে দৃতকেবন্দী করে কাফেলা অতর্কিত আক্রমন করেন। অতর্কিত আক্রমনে দলনেতা হযরত সৈয়দ মাহমুদ শাহী শেয়ার বলখী (:) হযরত মোঃ ফারুক শাহ্ (:) হযরত শাহ্ মিয়া গাজী (:) হযরত মোঃ কাবিল শাহ্ (:) সহ অনেকেই শাহাদত বরণ করেন। বগুড়ায় মুসলমানদের পরাজয়ের সংবাদ পেয়ে শাহ্ সুলতান রুমী (:) সদল বলে বগুড়ার উদেশ্যে যাত্রা করেন। সঙ্গীদের মৃত্যুতে তিনি শোকাহত হন এবং প্রতিশোধের নেশায় তাঁর অন্তরে আগুন জ্বলে উঠলো। এদিকে মুসলীম বাহিনীর আগমনের খবর পেয়ে রাজা পরশুরাম প্রতি রক্ষা বাহিনী নিয়ে অগ্রসর হয়ে যুদ্ধ শুরু করলেন। মাত্র শতেক সংগী নিয়ে হযরত শাহ্ সুলতান (:) পরশুরামের বিশাল বাহিনীকে পরাস্ত করেন। যুদ্ধে মুসলমি বাহিনীর জন শহীদ হন আর রাজা পরশুরাম সহ শতার্ধিক সৈন্য নিহত হয়। এযুদ্ধে বিজয়ের ফলে বগুড়া মুসলমানদের করতলগত হয় এবং দলেদলে বিধর্মীরা ইসলামের কলমা পাঠ করে মুসলমান হয়। কিছুদিন তিনি সেখানে থাকার পর কিছু সঙ্গী নিয়ে পূর্ব বঙ্গে যাত্রা শুরু করেন। সময় টাঙ্গাইলের মধুপুর এবং জামালপুর জেলার দুর্মোট অঞ্চলে কিছুদিন ইসলাম প্রচার শেষে মোমেন শাহ্ (:) কামাল শাহ্ (:) নামে সঙ্গীদের সেখানকার দায়িত্ব অর্পন করে তিনি অপর সঙ্গীসহ ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্ব তীরে বোকাইনগর পরগনায় অবস্থান নেন। সেখানকার সামন্ত শাসক বোকাই কোচ নির্দিধায় ইসলামের দাওয়াত কবুল করেন। সেখানে কিছুদিন তিনি ইসলাম প্রচার করে খ্রীষ্টীয় একাদশ শতকের মধ্যভাগে হিজরী ৪৪৫ সালে ৪০ জন সঙ্গীসহ সামন্ত রাজ মদন মোহন কোচের পরগনা মদনপুর আগমন করেন। জনশ্রুতি রয়েছে মদন কোচের রাজধানী পশ্চিম সিমান্তের কাছে এসে পরিশ্রান্ত সঙ্গীদের নিয়ে তিনি এক নির্জন স্থানে অবস্থান নেন। সেখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য ভাললাগায় রাত্রি যাপনের উদ্দ্যেশ্যে তাবু গাঁড়েন। মাগরিব নামাজ শেষে কোরান পাঠান্তে যখন তিনি তছবিহ্ জপতে থাকেন তখন তাঁর কানে গায়েবী আওয়াজ হতে থাকেহে কমর উদ্দিন তোমার অভীষ্ট কর্মক্ষেত্রে পৌঁছে গেছো। ভোর থেকেই ধম্য প্রচারে আত্ম নিয়োগ কর আওয়াজ শুনে তিনি আল্লাহর কাছে শোকরিয়ার জন্য সঙ্গীদের নিয়ে এখানে রাকাত নফল নামাজ আদায় করেন। সে সময় থেকে এস্থানটিনামাজ খানানামে পরিচিত। কারো মতে, এখানে যে কবরস্থান রয়েছে তাতে হযরত শাহ্ কমর উদ্দিন রুমী (:) অন্যতম এক সংগী শায়িত রয়েছেন। ৭৫ বছর বয়স্ক বৃদ্ধ খাদেম হাছেন আলী জানিয়েছেন, নামাজ খানার নামে একর ২০ শতক জমি পীর পাল লাখেরাজ রয়েছে।

অলৌকিক ঘটনা
হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (:) মদনরাজার বাড়ি থেকে কি:মি: পশ্চিমে নামাজ খানায় অবস্থান কালে তাঁর অন্যতম সহচর হযরত রূপশ মল্লিক (:) কে দূত হিসেবে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানোর জন্য রাজ দরবারে প্রেরন করলেন। সামন্ত রাজ মদন কোচ মুসলীম বাহিনীর আগমনের কথা শুনে বিচলিত হয়ে পড়েন। ইতি পূর্বেই মুসলীম বাহিনীর সাময়িক দক্ষতার কথা জেনে গিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন নাস্তিক-ঝড়বাদী এবং ক্রোধপরায়ন। প্রেরীত দূত যখন তার রাজ দরবারে ুউপস্থিত হলেন এবং ইসলামের দাওয়াত পৌঁছালেন। তখন তিনি প্রকাশ্যে কিছু না বলে কৌশলে মুসলীম বাহিনীকে ধ্বংশ করার পরিকল্পনা করেন। তার ভাবনা ছিল তান্ত্রিক শক্তিতে বলীয়ান মুসলীম ফকিরের প্রস্তাব প্রকাশ্যে প্রতাক্ষান করার ফল শুভ হবেনা। তাই তিনি তার পারিষদ বর্গকে নিয়ে পরামর্শ করলেন মুসলীম বাহিনীকে দাওয়াত করে এনে খাদ্যে বিষ মিশিয়ে হত্যা করবেন। রাজার সৈন্যগণ ইতি মধ্যে মুসলীম বাহিনীর ওপর আক্রমনে ব্যর্থ হয়ে কলেমা পাঠ করে দলে দলে ইসলাম গ্রহন করতে থাক। হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (:) কে হত্যার উদ্যেশ্যে প্রেরিত সেনা দলের আত্ম সমর্úনের খবর শুনে রাজার অন্তরে ভূমিকম্প শুরু হয়ে যায়। রাজা মদন কোচ কিছু সৈন্য সংগে নিয়ে ফকিরের তাবুর কাছে গিয়ে স্থান ত্যাগ করে তার রাজ্য সীমার বাইরে চলে যেতে নির্দেশ দেন। রাজার দিকে তাকিয়ে স্থান ত্যাগের আপত্তি জানালে রাজা তা মানতে রাজী হননি। তখন স্বীয় আসনের জায়নামাজ দেখিয়ে পরিমাণ জায়গার জন্য অনুরোধ জানান। রাজার উদ্যত আচরনে ফকির স্বীয় জায়নামাজ উর্দ্দে ছুড়ে মারার সংগে সংগে তা তীব্র গতিতে বেড়ে সমস্ত এলাকা আচ্ছাদিত করে ফেলে। অলৌকিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করে ভয়ে ধর্ম গ্রহণ করার ছলনা করে মুসলীম বাহিনীকে তার বাড়িতে দাওয়াত করেন। হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (:) এর কাফেলা ফজরের নামাজের পূর্বেই রাজবাড়ির সন্নিকটে এসে নামাজ আদায় করেন। রাজা তাদের আগমনে খুশি হয়ে রাজ দরবারে বসতে দিলেন এবং পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বিষ মিশানো তরল পানিয় মেহমানদের মাঝে পরিবেশন করা হলো। হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (:) ধ্যানে রাজার কুট চাল জানতে পেরে সঙ্গীদেরকে পানীয় পানের নিষেধ করেন। তিনি একাই বিষ মিশ্রিত তরল পানীয় পান করেন। কথিত আছে পানীয়ের সঙ্গে ১৪ তোলা বিষ মিশানো ছিল। বিষ মিশ্রিত পানীয় পানের ফলে তাঁর দেহে সামান্য অবসন্নতা দেখা দিলেও ঐশ্যরিক গুনে কিছুক্ষনের মধ্যেই তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেন। বিষ প্রয়োগে হত্যা করতে ব্যর্থ হয়ে রাজা তাঁর পারিষদ বর্গ মহান অলীর কাছে ক্ষমা চেয়ে পবিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। রাজার অনুরোধে মদনপুর সহ অন্যান্য কয়েকটি স্থানের নাম তার আত্মীয়দের নামানুসারে রাখা হয়। ইসলামের পতাকা হাতে নিয়ে হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (:) মদনপুর সাইডুলী নদীর পাড়ে আস্তানা গেঁড়ে ইসলামের ডংকা বাজালেন। কালক্রমে দলে দলে বিভিন্ন এলাকার বিধর্মীগণ ইসলামের পতাকাতলে সমাবেত হতে থাকেন। ইসলামের শান্তির বাণী প্রচারে সঙ্গীদেরকে বিভিন্ন উপদলে বিভক্ত করে এলাকায় প্রেরণ করেন। ইসলামী শিক্ষা প্রচারে সামন্ত রাজার রাজ প্রাসাদেজামে-উল-উলুম নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। বঙ্গের সর্বপ্রথম প্রাতিষ্টানিক ইসলামী শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত করেছিনে তিনি। ইসলাম প্রচার শিক্ষা বিস্তারের পাশাপাশি সালাত কায়েমের জন্য নিজ হাতে তাঁর খানকাহ্ পাশে একটি জামে মসজিদ প্রতিষ্টা করেন। মসজিদে তিনি ঈমামতি করতেন। মদনপুর বাসীর দাবী, বাংলার মাটিতে প্রথম প্রতিষ্টিত মসজিদ  থেকেই হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (:) তাঁর দীক্ষা গুরু সৈয়দ সুরখ্ সুরতনী (:) এঁর পরামর্শক্রমে দ্বীনি শিক্ষা ইসলাম প্রচার করতেন।

তাঁর ওফাত
যখন তিনি বুঝতে পারলেন্ তাঁর জীবনের শেষ সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে তখন তিনি ইসলাম প্রচার সমাজ সেবার দায়িত্ব সঙ্গীদের উপর অর্পন করে খানকা শরীফে এবাদত বন্দীগিতে মগ্ন হয়ে পড়েন। আনুমানিক ৫০ বছর এখানে বসবাসের পর মহান অলি সুফি সাধক হিজরী ৫০ শতাবদীর শেষ দিকে সকল ভক্তদের শোকসাগরে বাসিয়ে পরপাড়ে চলে গেলেন। খানকা বাড়ীতে তাঁকে সমাহিত করা হলে এখানেই তাঁর পবিত্র মাজার শরীফ প্রতিষ্টিত হয়। হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (:) বঙ্গে আগমনকারী প্রথম ইসলাম প্রচার কারী আরবিয় মিশন প্রধান। যিনি একাধারে আধ্যাত্বিক তত্ব জ্ঞানী, সুফি সাধক, আলেম, সমর বিষারদ, যুগান্তকারী সমাজ সংস্কারক এবং শ্রেষ্ট রাজনৈতিক দূর দর্শি সম্পন্ন ইসলাম প্রচারক ছিলেন। তাঁর হাতেই বাংলা তথা উপ-মহাদেশে ইসরামী সমাজ সংস্কৃতির গোড়া পত্তন হয়েছিল। এদেশে সর্ব প্রথম ইসলামের ডংকা বাজালেও বাংলার ইসলামী সংস্কৃতিতে তাঁর অবদান অনেকটাই খাটো করে দেখা হয়। একথা নিঃসন্দেহে স্পষ্ট, হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (:) বঙ্গে আগমন করেন ১০৫৩ খ্রিঃ অন্যদিকে হযরত খাজা মঈন উদ্দিন চিশতি (:) ১১৯৩ খ্রিঃ আজমিরে এবং হযরত শাহ্ জালাল (:) সিলেটে আগমন করেন ১৩০৩ খ্রিঃ। তাঁদের চেয়ে দেড়শ আড়াইশ বছর আগে যখন বাংলায় হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (:) এঁর আগমন  ঘটে তখন বংগে কোন মুসলিম শাসক ছিলেন না। 

প্রখ্যাত মুসলিম দরবেশের ৪০ জন সঙ্গীর পরিচয়:
          হযরত শাহ্ সৈয়দ উদ্দিন সূরখ ছুরতনী (:)  (প্রকাশ মীর সাহেব হুজুর)
          হযরত মোগল শাহ্ (:) (দলনেতা)
         হযরত দুয়ারী শাহ্ (:) (ওরফে জুবায়ের শাহ্)
          হযরত সৈয়দ শাহ্ (:)
          হযরত শাহ্ কামাল (:)
         হযরত বুড়াপীর শাহ্ (:)
          হযরত শাহাব উদ্দিন শাহ্ (:) (ছিলা শাহ্)
         হযরত করীম শাহ্ (:)
          হযরত হোসেন শাহ্ (:)
১০        হযরত শাহ্ নেওয়াজ (:)
১১        হযরত বালক শাহ্ (:)
১২        হযরত শাহ্ কিবরিয়া (:)
১৩       হযরত মিছকিন শাহ্ (:)
১৪        হযরত জামাল শাহ্ (:)
১৫        হযরত পাগল শাহ্ (:)
১৬       হযরত গোলাপ শাহ্ (:)
১৭        হযরত মজিদ শাহ্ (:)
১৮       হযরত শাহজাহান শাহ্ (:) (শাহ্ বাজ
১৯       হযরত আজর শাহ্ (:)
২০        হযরত রাখাল শাহ্ (:)
২১        হযরত আলম শাহ্ (:)
২২        হযরত দরবেশ শাহ্ (:)
২৩       হযরত বলাইশা শাহ্ (:)
২৪        হযরত ঈসমাইল শাহ্ (:)
২৫        হযরত করীম উল্লাহ (:)
২৬       হযরত সৈয়দ উল্লাহ (:)
২৭        হযরত খন্দকার জরগিল শাহ্ (:)
২৮       হযরত সৈয়দ গরিব শাহ্ (:)
২৯        হযরত আলী শাহ্ (:) ওরফে আনোয়াপীর
৩০       হযরত বিবি ঊষা (:) (সৈয়দা নূরজাহান)
৩১       হযরত বিবি ছিমা (:)
৩২       হযরত বিবি জাহেরা (:)
৩৩       হযরত বিবি সুলতানা (:) (সোয়া বিবি)
৩৪       হযরত সৈয়দ ছিদ্দিক শাহ্ (:)
৩৫       হযরত মাখন শাহ্ (:)
৩৬      হযরত রহমত উল্লাহ শাহ্ (:)
৩৭       হযরত দেওয়ান শাহ্ (:)
৩৮      হযরত দুধা দেওয়ান শাহ্
৩৯       হযরত মিয়া শাহ্ (:)
৪০        সৈয়দ রুস্তম শাহ্ (:)

নেত্রকোণার মদনপুরে সামন্তযুগে প্রচারিত ইসলামের মর্মবানী ভক্তদের জড়ো করতে ডংকা বাজানোর প্রথা চালু করেছিলেন হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (:) সে সময় থেকে চালু ডংকা বাজানোর প্রথা এখনও সাধকের মাজারে নিশি শেষে এবং গোধুলী লগ্নে বেজে উঠে। নেত্রকোণা জেলার প্রথম ঐতিহাসিক নিদর্শন ইসলামী ঐতিহ্যের ধারক হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (:) রোমের রাজত্ব ফেলে রেখে ফকিরি বেশে এসে মদনপুর শায়িত রয়েছেন। প্রাচীন বাংলার এ ঐতিহাসিক ইসলামী নিদর্শনটি হতে পারে আন্তজার্তিক মানের একটি উল্লেখ যোগ্য পর্যটন কেন্দ্র।


''Sign of Rasulullah'' Label's Other Link
 Indian Sahabi

এক অসাধারণ #না’তসহ দরূদ - বালাগাল উলা বি-কামালিহি: ইতিহাস, অনুবাদ ও তাৎপর্য