মুসলিম স্থাপত্যের অনুপম নিদর্শন মসজিদে নববী
মসজিদে নববী মানে নবীর মসজিদ। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মহানবী হযরত মুহাম্মদ
(স.) মদিনা শরিফে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। পবিত্র কাবা শরিফ মসজিদে হারামের
পরেই মদিনা মসজিদের অবস্থান। মহানবীর হিজরতের আগ পর্যন্ত মদিনার নাম ছিল
ইয়াসরিব। মহানবী হযরত মুহম্মদ (স.) ইয়াসরিবের নাম পাল্টে রাখেন মদিনা।
হিজরতের পর মুসলমানদের নামাজের জন্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) কর্তৃক
নির্মিত হয় মদিনা মসজিদ। ৬২২
খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরের পর থেকে শুরু হয়ে ৬২৩ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি
সময় পর্যন্ত মদিনা মসজিদের নির্মাণ কাল নির্ধারণ করা হয়।
নির্মাণপ্রক্রিয়া
মুহাম্মদ(সা:) মদিনা মসজিদের নির্মাণের জন্য নাজ্জার গোত্রের সাহল ও সোহাইল নামক দুই জন বালকের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় জমি ক্রয় করেন। এর ক্ষুদ্র একটি অংশে বাসস্থান নির্মাণ করতঃ বাকী অংশে মদিনা মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। প্রতিটি কোণ থেকে তীর নিক্ষেপ করে যে পরিমাণ জায়গা পাওয়া গেল তা হলো একটি ক্ষেত্র। বর্গের প্রতিটি বাহুর পরিমাণ দাৎড়ালো ১০০ হাত বা ৫৬ গজ। অর্থাৎ মদিনা মসজিদের প্রাথমিক আয়তন ছিল ১০০*১০০ হাত বা ৫৬*৫৬ গজ। মসজিদের ভিত্তি ও দেয়ালের নিম্নভাগ ৩ হাত পর্যন্ত প্রস্তর নির্মিত ছিল। প্রথম পর্যায়ে মদিনা মসজিদ রৌদ্র-শুষ্ক ইট দ্বারা নির্মিত হয়। এই রৌদ্র-শুষ্ক ইট বাকী আল-খাবখাবা উপত্যাকা হতে আনিত কাদা দ্বারা তৈরি হয়েছিল। তখন মদিনা মসজিদের দেয়াল ছিল ৭ হাত উঁচু। ছাদকে শক্তিশালী ও মজবুত রাখার জন্য মদিনা মসজিদের ৩৬টি খেজুর গাছকে স্তম্ভ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। মসজিদের ছাদ নির্মিত হয়েছিল খেজুর পাতা দিয়ে। ছাদকে সুন্দর করার জন্য, রৌদ্র ও বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য খেজুর পাতার উপর কাঁদামাটির আস্তরণ লেপে দেয়া হয়েছিল। সে সময় মদিনা মসজিদে প্রবেশের জন্য ৩টি দরজা ছিল। প্রধান প্রবেশ পথটি ছিল দক্ষিণ দিকে যা দিয়ে মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করতেন ও বাহির হতেন। পশ্চিম দেয়ালে ছিল মসজিদের দ্বিতীয় প্রবেশ পথ যা "বাবে রহমত" নামে পরিচিত। তৃতীয় প্রবেশ পথটি ছিল পূর্ব দেয়ালে যা দিয়ে মুহাম্মদ (সা:) এ মসজিদে প্রবেশ করতেন। এ জন্য এটির নাম হয় "বাব উন নবী", ঐতিহাসিক উইনসিংকের মতে, মদিনা মসজিদের দরজা প্রস্তর নির্মিত ছিল। মদিনা মসজিদেই সর্ব প্রথম মেহরাব, মিম্বার, আজান দেয়ার স্থান বা মিনার ও ওজুর স্থান সংযোজন করা হয়। বর্তমানে মদিনা মসজিদে আগের চেয়ে অনেক সম্প্রসারিত। সম্পূর্ণ নতুন নকশার ভিত্তিতে এটিকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে এবং একই সঙ্গে লক্ষ লক্ষ মুসল্লীর নামাযের সুব্যবস্থা করা হয়েছে।
মুহাম্মদ(সা:) মদিনা মসজিদের নির্মাণের জন্য নাজ্জার গোত্রের সাহল ও সোহাইল নামক দুই জন বালকের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় জমি ক্রয় করেন। এর ক্ষুদ্র একটি অংশে বাসস্থান নির্মাণ করতঃ বাকী অংশে মদিনা মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। প্রতিটি কোণ থেকে তীর নিক্ষেপ করে যে পরিমাণ জায়গা পাওয়া গেল তা হলো একটি ক্ষেত্র। বর্গের প্রতিটি বাহুর পরিমাণ দাৎড়ালো ১০০ হাত বা ৫৬ গজ। অর্থাৎ মদিনা মসজিদের প্রাথমিক আয়তন ছিল ১০০*১০০ হাত বা ৫৬*৫৬ গজ। মসজিদের ভিত্তি ও দেয়ালের নিম্নভাগ ৩ হাত পর্যন্ত প্রস্তর নির্মিত ছিল। প্রথম পর্যায়ে মদিনা মসজিদ রৌদ্র-শুষ্ক ইট দ্বারা নির্মিত হয়। এই রৌদ্র-শুষ্ক ইট বাকী আল-খাবখাবা উপত্যাকা হতে আনিত কাদা দ্বারা তৈরি হয়েছিল। তখন মদিনা মসজিদের দেয়াল ছিল ৭ হাত উঁচু। ছাদকে শক্তিশালী ও মজবুত রাখার জন্য মদিনা মসজিদের ৩৬টি খেজুর গাছকে স্তম্ভ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। মসজিদের ছাদ নির্মিত হয়েছিল খেজুর পাতা দিয়ে। ছাদকে সুন্দর করার জন্য, রৌদ্র ও বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য খেজুর পাতার উপর কাঁদামাটির আস্তরণ লেপে দেয়া হয়েছিল। সে সময় মদিনা মসজিদে প্রবেশের জন্য ৩টি দরজা ছিল। প্রধান প্রবেশ পথটি ছিল দক্ষিণ দিকে যা দিয়ে মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করতেন ও বাহির হতেন। পশ্চিম দেয়ালে ছিল মসজিদের দ্বিতীয় প্রবেশ পথ যা "বাবে রহমত" নামে পরিচিত। তৃতীয় প্রবেশ পথটি ছিল পূর্ব দেয়ালে যা দিয়ে মুহাম্মদ (সা:) এ মসজিদে প্রবেশ করতেন। এ জন্য এটির নাম হয় "বাব উন নবী", ঐতিহাসিক উইনসিংকের মতে, মদিনা মসজিদের দরজা প্রস্তর নির্মিত ছিল। মদিনা মসজিদেই সর্ব প্রথম মেহরাব, মিম্বার, আজান দেয়ার স্থান বা মিনার ও ওজুর স্থান সংযোজন করা হয়। বর্তমানে মদিনা মসজিদে আগের চেয়ে অনেক সম্প্রসারিত। সম্পূর্ণ নতুন নকশার ভিত্তিতে এটিকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে এবং একই সঙ্গে লক্ষ লক্ষ মুসল্লীর নামাযের সুব্যবস্থা করা হয়েছে।
সংস্কার ও সম্প্রসারণ
মদিনা মসজিদ বা মসজিদে নববী মুসলমান শাসকদের দ্বারা বহুবার সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। মুহাম্মদ (সা:) ওফাতের পর হযরত ওমর (রা:) ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে মসজিদে রববীর সম্প্রসারণ করেন। তিনি মসজিদটি উত্তর দিকে ৩০ হাত, দক্ষিণ দিকে ১০ হাত, পশ্চিম দিকে ২০ হাত সম্প্রসারণ করেন। হযরত ওমর (রা:) এর সময় মসজিদের পরিমাণ দাঁড়ায় উত্তর-দক্ষিণে ১৪০ হাত, পূর্ব-পশ্চিমে ১২০ হাত। হযরত ওসমান (রা:) এর সময় ৬৪৬-৬৪৭ খ্রিস্টাব্দে খেজুরপাতার পরিবর্তে ছাদে সেগুণ কাঠ ব্যবহার করা হয়। ছাদের আকার দাঁড়ায় ১৬০*১৩০ হাত। এ সময় সম্প্রসারিত হয়ে মসজিদের আকার দাঁড়ায় উত্তর দক্ষিণে ১৬০ হাত এবং পূর্ব-পশ্চিমে ১৫০ হাত। খলিফা আল ওয়ালিদের সময় মদিনা মসজিদটি আধুনিক ইমারতে পরিণত হয়। ওয়ালিদ ৭০৭ খ্রিস্টাব্দে সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে মসজিদে নববীকে সাজিয়ে তোলেন। তাঁর সময় মসজিদে নববীর পরিমাপ দাঁড়ায় ২০০*২০০ হাত। ৭০৭ খ্রিস্টাব্দে সর্ব প্রথম মদিনা মসজিদের চারকোণে ৪টি মিনার নির্মাণ করেন আল ওয়ালিদ। তখন প্রতিটি মিনারের উচ্চতা ছিল ৫০ হাত এবং প্রস্থে ছিল ৮ হাত। খলিফা মাহদী ৭৭৫-৭৮৫ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি সম্প্রসারণ করেন ৩০০*৩০০ হাত। আর মামলুক সুলতান কয়েত-বে মসজিদে নববীতে গম্বুজ প্রতিষ্ঠিত করেন। এতে গম্বুজ করা হয় ১৪৮১ খ্রিষ্টাব্দে। গম্বুজ সবুজ রং-এর আস্তরণ দিয়েছিলেন ওসমানী সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ ১৮৩৯ খ্রিষ্টাব্দে। বর্তমান আধুনিকায়নে মসজিদ-এ নববীর রূপদান করেন সৌদি বাদশাহ আব্দুল আজিজ ইবনে সউদ। এর পরিকল্পনা করা হয় ১৯৪৮ খ্রীস্টাব্দে। ১৯৫৩-১৯৫৫ সাল নাগাদ মসজিদ আধুনিকায়ন করা হয়। বিশালকার মসজিদে নববীর সমস্ত রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্ব সৌদি রাজ পরিবারের।
মদিনা মসজিদ বা মসজিদে নববী মুসলমান শাসকদের দ্বারা বহুবার সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। মুহাম্মদ (সা:) ওফাতের পর হযরত ওমর (রা:) ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে মসজিদে রববীর সম্প্রসারণ করেন। তিনি মসজিদটি উত্তর দিকে ৩০ হাত, দক্ষিণ দিকে ১০ হাত, পশ্চিম দিকে ২০ হাত সম্প্রসারণ করেন। হযরত ওমর (রা:) এর সময় মসজিদের পরিমাণ দাঁড়ায় উত্তর-দক্ষিণে ১৪০ হাত, পূর্ব-পশ্চিমে ১২০ হাত। হযরত ওসমান (রা:) এর সময় ৬৪৬-৬৪৭ খ্রিস্টাব্দে খেজুরপাতার পরিবর্তে ছাদে সেগুণ কাঠ ব্যবহার করা হয়। ছাদের আকার দাঁড়ায় ১৬০*১৩০ হাত। এ সময় সম্প্রসারিত হয়ে মসজিদের আকার দাঁড়ায় উত্তর দক্ষিণে ১৬০ হাত এবং পূর্ব-পশ্চিমে ১৫০ হাত। খলিফা আল ওয়ালিদের সময় মদিনা মসজিদটি আধুনিক ইমারতে পরিণত হয়। ওয়ালিদ ৭০৭ খ্রিস্টাব্দে সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে মসজিদে নববীকে সাজিয়ে তোলেন। তাঁর সময় মসজিদে নববীর পরিমাপ দাঁড়ায় ২০০*২০০ হাত। ৭০৭ খ্রিস্টাব্দে সর্ব প্রথম মদিনা মসজিদের চারকোণে ৪টি মিনার নির্মাণ করেন আল ওয়ালিদ। তখন প্রতিটি মিনারের উচ্চতা ছিল ৫০ হাত এবং প্রস্থে ছিল ৮ হাত। খলিফা মাহদী ৭৭৫-৭৮৫ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি সম্প্রসারণ করেন ৩০০*৩০০ হাত। আর মামলুক সুলতান কয়েত-বে মসজিদে নববীতে গম্বুজ প্রতিষ্ঠিত করেন। এতে গম্বুজ করা হয় ১৪৮১ খ্রিষ্টাব্দে। গম্বুজ সবুজ রং-এর আস্তরণ দিয়েছিলেন ওসমানী সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ ১৮৩৯ খ্রিষ্টাব্দে। বর্তমান আধুনিকায়নে মসজিদ-এ নববীর রূপদান করেন সৌদি বাদশাহ আব্দুল আজিজ ইবনে সউদ। এর পরিকল্পনা করা হয় ১৯৪৮ খ্রীস্টাব্দে। ১৯৫৩-১৯৫৫ সাল নাগাদ মসজিদ আধুনিকায়ন করা হয়। বিশালকার মসজিদে নববীর সমস্ত রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্ব সৌদি রাজ পরিবারের।
জিয়ারত
ইসলামে
ফজিলত লাভের উদ্দেশ্যে তিন মসজিদে ভ্রমণ করার অনুমোদন আছে। এর মধ্যে
প্রথমটি হলো মক্কা মুকাররমা বা কাবা শরীফ (সৌদি আরব)। দ্বিতীয়টি হচ্ছে
মসজিদ আল-আকসা বা বায়তুল মুকাদ্দাস : ইসলামের প্রথম কিবলা (ফিলিস্তিন)।
তৃতীয়টি হলো মদীনা আল-মুনাওয়ারার মসজিদে নববী : নবীজিকে যেখানে চির শয়নে
শায়িত করা হয়েছে। মদীনা নবীর শহর, একে আরবিতে বলা হয় ‘মদীনাতুন নবী।’ আর
মদীনার প্রাণকেন্দ্র হলো ‘মসজিদে নববী।’ মদীনার ৯৯টি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
রাসূলুল্লাহ্ (সা.) মদীনার বরকতের জন্য দোয়া করেছেন, একে হারাম বা সম্মানিত
ঘোষণা করেছেন।
*
হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে যে, ঘর থেকে অজু করে মসজিদে কুবায় গিয়ে নামাজ পড়লে
একটি উমরাহ্র সওয়াব পাওয়া যায়। মসজিদে নববী থেকে সামান্য দূরে ইসলামের ১ম
মসজিদ কুবা অবস্থিত।
*
মসজিদে নববীর ভেতরে স্বয়ংক্রিয় ছাদের ব্যবস্থা আছে, যা দিনের বেলা সুইচের
মাধ্যমে খুলে দেওয়া হয় আর রাতে বন্ধ করে দেওয়া হয়। মসজিদে নববীতে নারীদের
জন্য আলাদা নামাজ পড়ার জায়গা আছে। ভেতরে কিছুদূর পরপর পবিত্র কোরআন মজিদ
রাখা আছে, আর পাশে আছে জমজম পানি খাওয়ার ব্যবস্থা।
*পাশেই
‘জান্নাতুল বাকি’ গোরস্তান। এখানে হযরত ফাতেমা (রা.), বিবি হালিমা (রা.) ও
হযরত ওসমান (রা.) সহ অগণিত সাহাবায়ে কিরামের কবর রয়েছে। এর একপাশে নতুন
কবর হচ্ছে প্রত্যহ। এখানে শুধু একটি পাথরের খন্ড দিয়ে চিহ্নিত করা আছে
একেকটি কবর।
*
মসজিদে নববীর উত্তর দিকের গেট দিয়ে বেরিয়েই সাহাবাদের মসজিদ। পাশাপাশি
দু’টি এবং একটি একটু দূরে একই ডিজাইনে করা তিনটি মসজিদ। এগুলোকে ‘সাহাবা
মসজিদ’ বলা হয়। হযরত আলী, ওমর ফারুক ও আবু বকর (রাহ.) মসজিদ।
*
মসজিদে নববীতে সালাত আদায় ও দোয়া করার উদ্দেশ্যেই মদীনায় গমন এবং সালাত
আদায় করে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর রওজা শরীফ জিয়ারত করা ও সালাম পৌঁছানোর
ইচ্ছা প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের থাকে।
* জিয়ারত ও নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে মদীনায় যাওয়া সুন্নত। মসজিদে নববীতে নামাজ পড়ার ফজিলত বেশি।
*
মসজিদে নববীতে জিয়ারতের জন্য ইহরাম বাঁধতে বা তালবিয়া পড়তে হয় না। তবে
মদীনা থেকে যদি মক্কায় আবার আসতে হয়, তাহলে মিকাত বীর আলী পার হলে ইহরাম
বেঁধে আসতে হবে।
No comments:
Post a Comment
https://isignbd.blogspot.com/2013/10/blog-post.html