আলহামদুল্লিাহ! ইউরোপজুড়ে গির্জা ভেঙে গড়ে উঠছে পবিত্র মসজিদ
লিখেছেন: মহানন্দা
যুক্তরাজ্যের একটি ক্যাথলিক গির্জা মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে বিক্রি করে 
দেয়া হয়েছে। কব্রিজের সেন্ট পিটার্স ক্যাথলিক চার্চের স্থানে গড়ে উঠবে 
‘মদীনা মসজিদ’ নামক পবিত্র মসজিদ। উপাসনাকারীর সংখ্যা অস^াভাবিকভাবে কমে 
যাওয়ায় গির্জাটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
গির্জার একজন মুখপাত্র বলেছে, এই গির্জাটির রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। কিন্তু 
সাম্প্রতিক সময়ে এর পূজারির সংখ্যা এতটাই কমে গেছে যে, এখানে একজন যাজক 
রাখা এবং ভবনের রক্ষণাবেক্ষণ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এভাবে ইউরোপজুড়েই খ্রিস্টান
 ধর্মের অনুসারীদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি খ্রিস্টান ধর্মের স্থান 
দখল করে নিচ্ছে পবিত্র দ্বীন ইসলাম।
ফ্রান্সের বিখ্যাত এমানুয়েল মুনিয়ার, জর্জেস বার্নানোস, ফ্রাসোয়া 
মরিয়াক, জ্যাক মরিটেইন, তেইলহার্ড ডি চার্ডিনসহ বহু গির্জার স্থানে মজসিদ, 
শো-রুম ও শপিং মল গড়ে উঠছে। দা অবজার্ভেটরি ফর রিলিজিয়াস হেরিটেজ জানায়, 
প্রথমবারের মত (খ্রিস্টান) উপাসনালয়গুলো ভেঙে সেখানে পার্কিং সুবিধা, 
রেঁস্তোরা, বুটিক হাউস, বাগান ও ঘরবাড়ি গড়ে উঠছে।
ফ্রান্সের সিনেট জানিয়েছে, দেশটির ২,৮০০ খ্রীস্ট ধর্মীয় ভবন উচ্ছেদ করার
 আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও ফ্রান্সে ৪০,০০০ যাজক 
ছিলো। এখন সেই সংখ্যা নেমেছে ৯০০০-এ। অনেক গির্জা ভেঙে গড়ে উঠেছে মসজিদ।
সেইন্ট ক্রিস্টোফারের পুরাতন গির্জা কুই মালাকফ নান্টিসের স্থানে গড়ে উঠেছে ‘ফোরকান মসজিদ’।
ইতিহাসবিদ ডিডিয়ার রিকনার লিখেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম 
গির্জাগুলো গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। গত জুনে ভিরজনের সেইন্ট-ইলোই গির্জাকে 
মসজিদে রূপান্তর করা হয়েছে। এ অবস্থার মধ্যেই দা ন্যাশনাল ফেডারেশন অব দা 
গ্রেট মস্ক অব প্যারিস খালি পড়ে থাকা গির্জাগুলোকে জুমার নামাযের জন্য ভাড়া
 দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।
জার্মানির বড় বড় গির্জাগুলোকে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। 
ব্রান্ডেবার্গের সেইন্ট বার্নার্ড গির্জাটি বিক্রির দাম হাকা হয়েছে ১ লাখ 
২০ হাজার ইউরো। গত ১০ বছরের এই এলাকায় এটি নিয়ে ২৫টি গির্জা বিক্রি হবে। 
‘ঈশ্বর মৃত’ সেøাগান দিয়ে জার্মানির গির্জাগুলো বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। 
সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন স্পিরিটের হিসেবে, আগামী দুই বছরের মধ্যে জার্মানির ৪৫
 হাজার গির্জার মধ্যে ১৫ হাজার বা প্রায় এক তৃতীয়াংশই উচ্ছেদ অথবা বিক্রি 
হয়ে যাবে।
তবে দাবি করা হচ্ছে, অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে গির্জাগুলো বিক্রি করে 
দেয়া হচ্ছে না। জার্মানরা ক্রমেই ধর্ম ত্যাগ করছে। প্রতি ৭৫ সেকেন্ডে একজন 
জার্মান গির্জায় যাওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে।
জার্মানি ইভানজেলিকাল চার্চই ১৯৯০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ৩৪০টি গির্জা 
বন্ধ করে দিয়েছে। সম্প্রতি হামবুর্গে মুসলিম সম্প্রদায় একটি গির্জা কিনে 
নিয়েছে।
জার্মানির প্রভাবশালী দার স্পাইজেল সাময়িকী জানায়, স্পানদাউয়ে সেন্ট 
রাফায়েল গির্জাকে মুদি দোকানে রূপান্তর করা হয়েছে, নাস্তিক কাল মার্কসের 
শহরে একটি গির্জাকে জিমে পরিণত হয়েছে। কোলোনে একটি গির্জাকে বিলাসবহুল 
বাসভবেন পরিণত করা হয়েছে, যেখানে প্রাইভেট পুলও তৈরি করা হয়েছে।
ফ্রাঙ্কফুটে গত শতাব্দীর ৫০ এর দশকে প্রোটেস্ট্যান্টের সংখ্যা ছিল ৪ লাখ
 ৩০ হাজার। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১০ হাজারে। এখানকার এক চতুর্থাংশ 
গির্জাই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
নেদারল্যান্ডে প্রতি সপ্তাহে দুটি খ্রীস্ট ধর্মীয় ভবন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। 
যাজক জান স্টুইট বলেছে, ‘নেদারল্যান্ডে রবিবার গির্জায় ক্যাথলিকদের 
উপস্থিতি ছিল ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, শতকরা ৯০ জন। এখন এই সংখ্যা কমে 
দাঁড়িয়েছে শতকরা ১০ জনে।’
নেদারল্যান্ডে প্রতি বছর ৬০টি খিস্টীয় উপাসনালয় উচ্ছেদ, বন্ধ অথবা 
বিক্রি হয়ে যায়। ১৯৭০ সাল থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে ২০৫টি গির্জা উচ্ছেদ করা 
হয়েছে। এ সময় ১৪৮টি গির্জাকে লাইব্রেরি, রেঁস্তোরা, জিম, অ্যাপার্টমেন্ট ও 
মসজিদে রূপান্তর করা হয়েছে। আমস্টারডামে একটি গির্জার জায়গায় গড়ে উঠেছে 
ফিটি কামি পবিত্র মসজিদ। শহরের সবচেয়ে পুরনো সেইন্ট জ্যাকোবাস গির্জাটিকে 
বিলাসবহুল বাসভবনে রুপান্তর করা হয়েছে।
এই শহরের প্রোটেস্ট্যান্ট গির্জাগুলোর অনুসারীর সংখ্যা প্রতি বছর ৬০,০০০
 করে কমছে। এই হার অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সালে এখানে আর কোনো প্রোটেস্ট্যান্ট 
খ্রিষ্টান থাকবে না।
সম্প্রতি ইউট্রেস্টট ও আমস্টারডামের দুটি গির্জাকে মসজিদে রুপান্তর করা 
হয়েছে। এই হলো পাশ্চাত্যের বর্তমান অবস্থা। সূর্যাস্তের দেশগুলোয় খ্রীস্ট 
ধর্মের সূর্য এরূপ করুণভাবে অস্ত যাচ্ছে। সেখানে উদিত হচ্ছে প্রাচ্যের নতুন
 সূর্য ‘পবিত্র দ্বীন ইসলাম’।
Source: http://shobujbanglablog.net 
 
 
 
 
   
  